শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খেলাধুলার প্রয়োজন রয়েছে।

শিশুদের খেলাধুলা

শিশুদের খেলাধুলা
Image by Author







শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে প্রথম ও শ্রেষ্ঠ সময় হচ্ছে শৈশবে প্রথম 5 থেকে 7 বছর এবং পরিবার থেকে শিশুর প্রথম শিক্ষা জীবন পরিচালিত হয়। একজন শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য তার মা-বাবা উভয়কেই সমান সচেতন হওয়া প্রয়োজন। 

মা-বাবার মধ্যে অনেক বিষয়ে মতের অমিল থাকতে পারে, কিন্তু সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে দুজনের একমত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। না হলে সন্তান অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ করতে পারে। শত ব্যস্ততার মধ্যেও সন্তানের লেখাপড়া, খেলাধুলা ও বিনোদনের সময় কিভাবে কাটায় তার সার্বিক খোঁজ-খবর মা-বাবাকে নিতে হবে।

শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খেলাধুলার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুর দেহ ও মনকে একসাথে ব্যবহার করার অনুশীলন হয়। আনন্দ হাসি খুশি খেলায় শিশু পৃথিবীর ও পারিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে মৌলিক ধারণা পেতে শুরু করে। খেলাধুলা মানুষকে নতুন চিন্তা করতে শেখায়।

 সমস্যার সমাধানে কৌশল শেখায় এবং স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে। প্রকৃত অর্থে বন্ধু ও সমবয়সীদের সাথে খেলাধুলার মাধ্যমে শিশু কিশোররা শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন করে এতে করে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। 

খেলার মাধ্যমে শিশু  ছোট ছোট সমস্যাগুলোর উপরে এসে জেতার চেষ্টা করে। সুস্থভাবে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের অভ্যাস অর্জন করে, ভালো মন্দ ন্যায় অন্যায় সম্পর্কে বুঝতে শেখে, শিশুর মধ্যে মানুষ ও জগৎ সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয় এই খেলার মাধ্যমে। শিশুর জীবনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা এত কম কথায় বলে শেষ করা যাবে না, অতএব খেলাধুলাকে কিছুতেই অবহেলা, অবজ্ঞা করা চলবে না বরং গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।

শিশুদের খেলাধুলা
Image by Author






অনেকে মনে করে খেলাধুলা করলে সময় নষ্ট হয় এ সময় টুকু লেখাপড়ায় ব্যয় করাই শ্রেয়। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল, ঘরের ভিতরে ও বাইরে যেকোনো ধরনের খেলা শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তাই বাধা না দিয়ে ছেলেমেয়েকে বাইরে ও বাড়িতে নিয়মিত খেলাধুলা করার সুযোগ দিতে হবে।

বাড়ির বাইরে খেলাধুলা করতে গিয়ে যদি গায়ে ধুলাবালি না লাগে তাহলে আনন্দ, উত্তেজনা, অনুভূতির অনুভব করবে কিভাবে। বন্ধুর সাথে হৈচৈ, ঝগড়া, মারামারি করে যা কিছু শিখবে; যন্ত্রের সাথে খেলা করে তার কিছুই শিখতে পারবে না.. তাই বন্ধুর সাথে খেলার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। 

শিশুর নতুন নতুন পরিস্থিতিতে জ্ঞান-বুদ্ধির ব্যবহারের সুযোগ পাবে। পাশাপাশি ঘরের কাজ করার অভ্যাস থাকলে মেধার বিকাশ ঘটে অনেক দ্রুত। না হলে  পরবর্তীতে সে পরনির্ভরশীল হয়ে উঠবে এবং অন্যদের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে তার কষ্ট হবে। 

শিশুদের খেলাধুলা
Image by Author






প্রতিদিন  অন্তত দুই এক ঘন্টা আনন্দ করে সময় কাটানো প্রয়োজন। মাঝে মাঝে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সময় কাটানো দরকার। বাইরে গেলে বন্ধুদের সাথে মিশে সন্তান নষ্ট হয়ে যেতে পারে এ অমূলক ভয় কে মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। ঘরে বন্দী করে বাঁধাধরা থেকে ছেলেমেয়ে অতিষ্ঠ হয়ে বিপদে পা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে পারে।

প্রতিদিন বা সপ্তাহে অন্তত একদিন বাইরে খোলা জায়গায় বেড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। মজা ও আনন্দ করার সুযোগ পেলে পরিবারের ছোট বড় সবার মানসিক আবেগের বিকাশ সুষ্ঠু ও যথাযথভাবে সু-সম্পন্ন হতে পারে এতে করে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

 তাছাড়া বড়রাও মজা ও আনন্দ করার সুযোগ পেলে মনের কষ্ট, দ্বন্দ্ব দূর করার খুব সহজ হয়ে যাবে। হতাশা ও টেনশন মুক্ত হওয়ার সহজ পথ খুঁজে পেতে পারে। তাই শিশুর জীবনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।