কিভাবে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখবো?
আমাদের শিশুকাল থেকে শিক্ষা দেওয়া হয় যে কিছু কিছু নির্দিষ্ট অর্জন করতে পারাই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য স্কুলে ভালো করতে, কলেজে ভালো করতে, সম্মানজনক চাকুরী পেতে, ভালো বাসস্থান পেতে বা সঠিক জীবন সঙ্গী পেতে আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করে যাই। এভাবে ক্রমাগত আমরা সফলতা পায় এবং সুখ ও সফলতা অর্জন জীবনব্যাপী চলতে থাকে। একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, এগুলোর প্রত্যেকটি আমাদেরকে সুখী করবে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে এগুলোর কোনোটিই আমাদের সুখের মাত্রার প্রভাব ফেলার তেমন সুযোগ নেই। মূলত যা ঘটে তা হচ্ছে আমরা এরকম প্রতিটি লক্ষ্য অর্জন করি এবং কিছু সময়ের জন্য সুখী অনুভব করি। তারপর দেখতে পায় আমাদের নতুন কোনো লক্ষ্য ঠিক করতে হচ্ছে যা আরো উঁচু মাত্রার পূর্বের মত সুখী হওয়ার জন্য।
এভাবে সর্বশেষ বিচারে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সুখ কোনভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ ও তা অর্জনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। বরণ মুখ্য হচ্ছে নিজের ভিতরেও নিজের প্রত্যাহিক জীবনে সুখ, আনন্দ, মানসিক প্রশান্তি খুঁজে পাওয়া।
সফলতা সুখ উৎপাদন করে না বরং সুখ সফলতা আনতে পারে। যারা অতিমাত্রায় সুখী তারা তাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্যম উদ্দীপনা দিয়ে সফলতাকে আকৃষ্ট করে।
জীবনে সুখী হবার কিছু বিজ্ঞানসম্মত উপায় নিচে আলোচনা করা হলো:
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও কৃতজ্ঞ থাকা অনুভব:
সুখ ও আনন্দের জন্য এসব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনেক কিছুর জন্যই কৃতজ্ঞ থাকতে পারি। যেমন:- আমাদের শারীরিকস্বাস্থ্য, আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য, সন্তান, বাসস্থান, এমনকি অন্তত দু বেলা খাওয়ার মতন খাদ্য পাচ্ছি তার জন্য। জীবনের যা কিছু ভালো সেগুলো নিয়ে ভাবা যায় এবং সেগুলো গণনায় আনতে হবে এমনকি পথের মধ্যে গোলাপ দেখলে তার ঘ্রাণ নিয়েও ওই মুহূর্তে সুখ অনুভব করতে পারা যায়।
দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করা:
আগামীকালের জন্য কোন কিছু স্থগিত করে রাখা যাবে না। সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে সঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারলে মনের ভিতর তৃপ্তি অনুভব করা যায়। কাজ সমাপ্ত করতে পারলে অভীষ্ট পূরণের আনন্দ পাওয়া যায়, যা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখবে।
কৌতুহলী হওয়া:
বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে কৌতুহলী হওয়া, যা মনকে সজীব রাখে। নতুন কোন বই পড়া, নতুন কিছু লেখা, ডকুমেন্টারি দেখা অথবা কোন গভীর তাত্ত্বিক বিষয়ে অর্থপূর্ণ আলোচনা করা, যা মানসিকভাবে তৃপ্তি দেবে। এতে করে মন সফলতা ও আনন্দে ভরে উঠবে এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
অন্যের সঙ্গে কানেকশন তৈরি করা:
আমাদের সুখ শান্তির জন্য সামাজিক সম্পর্ক সহায়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য ফোনে কথা বলা যায় বা সরাসরি কথা বলা যায়। যেভাবেই হোক সংযুক্ত হওয়ার ব্যাপারটি আমাদের চাঙ্গা রাখবে এবং ভাল অনুভব করাবে, এতে করে মানসিক তৃপ্তি অনুভব করা যাবে।
নতুন অভিজ্ঞতার প্রতি উন্মুক্ত থাকা: যেকোনো নতুন অভিজ্ঞতাকে স্বাগত জানানো এবং একে সানন্দে গ্রহণ করা প্রয়োজন। নতুন কিছু করা মজাদার, আনন্দের, উত্তেজনাপূর্ণ এবং উৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে। নিজের মন ও ধারণাকে সমৃদ্ধ করতে এর তুলনা নেই। যেমন হতে পারে নতুন কোন খাবারের স্বাদ।
দয়া-মায়া করুণা ও স্নেহ প্রদর্শন:
যারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাদের চেয়ে যারা অন্যদের জীবন নিয়ে আগ্রহী, তারা অধিকতর সুখে থাকেন। চেষ্টা করা যায় প্রতিদিন কিছু-না-কিছু দয়া, মায়া দেখাতে। নিজের লোক বা বাইরে অপরিচিত কাউকে মায়া, ভালবাসা, করুনার জন্য কিছু করা যায়, এতে করে দেখা যাবে অন্যের জন্য যত সামান্য কিছুই করি না কেন তা অবশ্যই মনকে শীতল করবে, মানসিকপ্রশান্তি আনবে এবং নিজেকে বড় মহৎ ও গর্বিত মনে হবে।।
1 Comments
নিজেকে সুখী অনুভব করার জন্য এই কৌশল গুলো কার্যকরী হবে বলে আমি মনে করি।
ReplyDeleteFeel free send us your options.