শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য
Image by Author |
যেসব শিশুর জন্মগত ভাবে ভীরুতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে তাদের এমিগডালা অতি উত্তেজনা প্রবণ হয়। তাদের তিনজনের একজন স্কুলে ভর্তি হওয়ার কালেই তাদের ভীরুতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন।
এ থেকে প্রমাণিত হয় মা-বাবা বিশেষ করে মা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, কোন সহজাত ভীরু সন্তান; সাহসী, আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠতে পারবে কিনা। গবেষণায় দেখা যায়, কিছু মা রয়েছেন যারা বিশ্বাস করেন যে, তাদের উচিত তাদের ভীরু সন্তানদের সব ধরনের বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা দেওয়া।
অন্যরা মনে করেন এ ধরনের পরিস্থিতি কি ভাবে সামলে দিতে হবে শিশুদেরকে সে ব্যাপারে সহায়তা করা। অপরদিকে যারা সংরক্ষণবাদী; তাদের শিশুকে যেহেতু পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে না তাই সে শিশুরা শিখতে পারেনা কিভাবে ভয় কে জয় করে এগিয়ে যেতে হয়। তবে যারা পরিস্থিতির সাথে খাপ-খাওয়ানোর জন্য সাহায্য করে তাদের সন্তানরা সাহসী ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পন্ন হয়ে ওঠে।
গবেষণা হতে দেখা যায় যে, মন-মেজাজই একমাত্র আমাদের ভবিষ্যৎ ভাগ্য নির্ধারণ করে না, অতি উত্তেজনা প্রবণ এমিগডালাকে পোষ মানানো যায়, সঠিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে।
পার্থক্য তৈরী করে শিশুরা বেড়ে উঠার সময় যে ধরনের আবেগীয় শিক্ষণ ও সাড়া প্রদান করে সেগুলোর উপর। ভীরু লাজুক শিশুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, প্রথম থেকেই তাদের মা-বাবা তাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেন এবং তাদের প্রকৃতিগত ভীরুতাকে কিভাবে সামলে থাকেন। যে মা-বাবা ক্রমশ সন্তানদের সাহস দেওয়া, আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করা অব্যাহত রাখে, তাদের সন্তানেরা এমন সংশোধিত জীবন অভিজ্ঞতা পায়, যা সারাজীবন তাদের ভীরুতা, লাজুকতাকে মোকাবেলা করতে সাহায্য করে।
বাসাবাড়িতে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, 6 মাস বয়সে যেসব মা সুরক্ষা দেয় তারা তাদের শিশু যখন কাঁদে বা জ্বালাতন করে তারা তাদেরকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে তাদেরকে কোলে তুলে নেয় এবং অনেকক্ষণ খুলে রেখে প্রবোধ দিতে থাকে। দেখা গেছে এরকম মায়েরা শান্ত অবস্থার চেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় শিশুদেরকে অধিক কোলে তুলে রাখে।
Image by Author |
আরেকটি পার্থক্য দেখা গেছে যে, এক বছরের মাথায় সুরক্ষাদানকারী মায়েরা তাদের সন্তানের ক্ষতি হবে, বিপদ হবে, এমন বিষয়ে সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা উদাসীন থাকে। যেমন মুখে এমন কিছু দিয়ে রাখা, যায় শিশু গিলে ফেলতে পারে। অন্যদিকে যারা তেমন সুরক্ষা দেয় না তারা দৃঢ় মাত্রার সীমা বেঁধে দেয়। সরাসরি আদেশ বা নির্দেশ দেয়, শিশুর কাজ থামিয়ে দেয় এবং বাধ্য থাকতে ক্রমাগত তাগিদ দিয়ে থাকে।
কেন দৃঢ়তা ভীরুতা কমায়? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, শিশুর যখন হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটতে শুরু করে তখন যে সব বস্তুর দিকে আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে যায়। কিন্তু ও বিপদজনক মনে করলে মায়েরা তাকে থামিয়ে দেয় ও বলে এটি থেকে দূরে থাকো। এরকম শত শত বার তাকে বাধার সম্মুখে পড়তে হয়। এর ফলে শিশু স্বল্প মাত্রায় ক্রমাগত অভ্যস্ত হতে থাকে যে, জীবনে অপ্রত্যাশিত কিছুর সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই রকম ভাবে ভীরু শিশু কেউ স্বল্প ডোজে ভয়ের বিষয়ে মোকাবেলা করার সাহস যোগাতে হবে, যে এভাবে মোকাবেলা করতে পারবে। এভাবে আস্তে আস্তে তাকে ভয় এর ক্ষেত্রে অভ্যস্ত করালে শিশুর ভয় কে জয় করা শিখে যাবে।
যখন মা বাবা সন্তানকে ভালোবাসার সত্বেও ছোটখাটো প্রতিটি বিপর্যয়ের সময় দৌড়ে গিয়ে কোলে তুলে নিয়ে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেনা। তখন ঐ শিশু ধীরে ধীরে নিজেই ঐরকম পরিস্থিতি কিভাবে ম্যানেজ করতে হবে তা শিখে নেই এবং শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
1 Comments
ধন্যবাদ উপকারী পোস্টের জন্য।
ReplyDeleteFeel free send us your options.