-->

আত্মমর্যাদাবোধ বাড়ানোর উপায়।

আত্মমর্যাদাবোধ বাড়ানোর উপায়। আত্মমর্যাদাবোধ বাড়ানোর উপায়। কিভাবে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখবো? গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জেনে নেওয়া ভালো।

আত্মমর্যাদাবোধ বাড়ানোর উপায়।

 

আত্মমর্যাদাবোধ বাড়ানোর উপায়।
Image by Author













আত্মমর্যাদাবোধ বাড়ানোর উপায়:
একটা জিনিস লক্ষ্য করলে দেখা যায় আত্মমর্যাদাবোধ এই শব্দে আত্ম বা নিজের সম্পর্কে বলা হয়েছে, এর মানে হচ্ছে আমি নিজেই নিজেকে শ্রদ্ধা করছি, সম্মানিত ও মর্যাদাবান ভাবছি। এক্ষেত্রে অন্যরা তেমন ভাবছে কিনা সে কথা বলা হয়নি। এটি হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা। এখানে এই নিঃশর্তভাবে নিজেকে যোগ্য, সম্মানিত, শ্রদ্ধেয় মনে করা ও বিশ্বাস করার নামই হচ্ছে আত্মমর্যাদাবোধ বা আত্ম শ্রদ্ধা। আত্মমর্যাদাবোধ এই কথাটিতে দুটি জিনিস লক্ষ্য করা যায়:

এক হচ্ছে নিঃশর্ত হওয়া। অর্থাৎ অন্যেরা তেমন ভাবছে কিনা বা তেমন মনে করছে কিনা এই শর্ত থাকলে চলবে না। এসব শর্ত ছাড়াই নিঃস্বার্থভাবে নিজেকে ভালো হিসেবে, ন্যায়বান, সৎ, যোগ্য, গুরুত্বপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য, সম্মানিত ও গর্বিত একজন মানুষ হিসেবে দেখা।  এখানে আমি এরকম যদি হতে পারতাম বা ঐরকম সফলতা ও যোগ্যতা যদি থাকতো তাহলে আমি শ্রদ্ধেয়, প্রশংসিত হতাম, এরকম শর্ত থাকলে চলবে না। মোট কথা হচ্ছে নিঃশর্তভাবে নিজেকে যোগ্য ও উত্তম ভাবতে হবে।

আত্মমর্যাদাবোধ বাড়ানোর উপায়।
Image by Author












দ্বিতীয় হচ্ছে, এরকম শুধু ভাবলে হবে না। এটি শুধু কথার কথা হলেও চলবে না। এটি মনেপ্রাণে ও আবেগ দিয়ে বিশ্বাস করতে হবে। আমরা তো কত কথাই মুখে বলে থাকি সেগুলোর তেমন মূল্য নেই। মূল্য আছে সেগুলোর, যেগুলো অন্তর থেকে বিশ্বাস করি। আমি যে রকমই হইনা কেনো আমার নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বা নিঃশর্তভাবে মেনে নিতে পারলেই আমি একজন আত্মমর্যাদাবান মানুষ হয়ে উঠতে পারব।

অবশ্যই আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, অনেক ধরনের ত্রুটি ও দুর্বলতা আছে কিন্তু সেটা স্বাভাবিক। কারণ সব মানুষেরই কমবেশি তেমন থাকে। তাই বলে শুধু বেশি যোগ্যতা ও ধন-সম্পদ দিয়ে সেই হীনতাকে কাটাতে পারবে না। কারণ এটি হচ্ছে এক ধরনের "ক্ষুধা" এবং  "ভিক্ষাবৃত্তি" যা আমরা অন্যদের কাছ থেকে ভিক্ষা চাচ্ছি বা তাদের সমর্থন ও তাদের গ্রহণযোগ্যতা, তাদের অনুমোদন, তাদের কাছ থেকে সম্মান ও স্বীকৃতি চাচ্ছি। আর এই আকুতি, মিনতি, ভিক্ষা প্রার্থী যতদিন থাকবে ততদিন আমরা সত্যিই হীনতা নিয়ে বেঁচে থাকব।

আমাদের মধ্যে আরেক ধরনের ভিক্ষাবৃত্তি আছে সেটি হচ্ছে "সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা"। অবশ্যই একদিকে বলা হয় সমাজের সঙ্গে সমঝোতা করে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হবে। সমাজের একজন হয়ে সমাজের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত পরিহার করে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। আর এখন বলা হচ্ছে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা সমাজের অনুমোদন ও সমর্থনকে কেয়ার না করতে। একটু চিন্তা করলে দেখা যাবে কথা দুটি স্ববিরোধী কথা নয়। আর সেটা বুঝতে হলে প্রয়োজন অতিরিক্ত সামাজিক সমর্থন বা অনুমোদন এর ব্যাপারটি ভালোভাবে ও স্বচ্ছভাবে জানতে হবে। 

একটি কথা মনে রাখতে হবে আমি ভালো কি মন্দ, আমার আচার-আচরণ, স্বভাব-চরিত্র, ব্যক্তিত্ব উত্তম, গ্রহণযোগ্য, সমর্থনযোগ্য, অনুমোদনযোগ্য কিনা এ ব্যাপারটি কোনভাবে অন্যদের খেয়ালখুশির হাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। 

আত্মমর্যাদাবোধ বাড়ানোর উপায়
Image by Author


মানুষ আমাকে বা অন্য যে কোন মানুষকে গ্রহণ করে, বর্জন করে, সম্মান করে, গুরুত্ব দেয়, সমর্থন করে, পছন্দ করে, তাদের স্ব-স্ব দৃষ্টিকোণ, নিজস্ব স্বার্থ ও সুবিধা  বিবেচনা করে। কারণ খুব কম মানুষই সত্যিকার গুন ও যোগ্যতা বিচার করে তেমনটি করে থাকে। 

এসব ধারণা, ভাবনাগুলো খুবই আপেক্ষিক এবং সহজ। উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়, আমাদের নিজেদের পরিবারের সদস্যরা মাঝেমধ্যে আমাদের প্রতি খারাপ মন্তব্য করে থাকে। আর তা তাৎক্ষণিক আবেগ ও পরিস্থিতির কারণেই বলে। তারা কখনো আমাদেরকে অন্তর থেকে খারাপ জানে না। এরকম মন্তব্য যদি পরিবার থেকে পাওয়া যায়, তাহলে সে ক্ষেত্রে বাইরের বৈরী ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ পৃথিবীতে অন্যরা আমাদের সার্বক্ষণিক প্রশংসা, সমর্থন, ভালোবাসা, গ্রহণযোগ্যতা দিয়ে যাবে এমনটি ভাবা অবাস্তব চিন্তা মাত্র। 

পরিবারের সদস্যরা এরকম বৈরী মন্তব্য করে থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিস্থিতির কারণে, নিজেদের ক্ষোভ, হিংসা বা বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে। তাই এগুলো তাৎক্ষণিক এবং এগুলোর কোনো স্থায়ী কারণ নেই। আর আমরা যেন  আমাদের মনে সেই খারাপ মন্তব্য গুলোকে বেঁধে না রাখি স্থায়ী রূপ দিয়ে।


Post a Comment

0 Comments