-->

ক্ষমা করা এবং ক্ষমা চাওয়ার কিছু প্রয়োজনীয় টিপস

ক্ষমা করা


অন্যকে ক্ষমা করে দেওয়া এবং অন্যদিকে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে আমরা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারব এবং জীবনে বাকিটা সময় প্রফুল্লতানিয়ে বেঁচে থাকব।



ক্ষমা করা

















ক্ষমা করার প্র্যাকটিস

 মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে জানতে হবে। অন্যের জন্য ঘৃণা, হিংসা, ক্ষোভ, নালিশ, অভিযোগ ইত্যাদি মনে ধরে রাখলে এগুলো আমাদের মনের বা মানসিক স্বাস্থ্যের প্রসন্নতাকে শুষে নিবে। তাই কিভাবে ক্ষমা করে দেওয়া যায়, তার কিছু টেকনিক রয়েছে। এ টেকনিকগুলো প্রতিদিন অনুসরণ করলে সফল হওয়া যায় বা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়। আর এই টেকনিকগুলো প্রতিদিন এমন ভাবে প্র্যাকটিস করতে হবে যেন তার মধ্যে সততা, আন্তরিকতা থাকে এবং তা যেন আমাদের ব্যক্তিত্বের মধ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে থাকে। এই টেকনিক কি প্রতিদিন প্রাক্টিসে, আমাদের অতীতের ক্ষোভ, যন্ত্রণা, অপমান, বিরক্তি, অন্তর জ্বালা, মানসিক অশান্তি এবং কষ্ট থেকে মুক্ত করবে ও জীবনকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে দেখার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে। 

অনেকে মনে করে সব অপরাধ মাফ করে দেওয়া যায় না। কিন্তু আমরা কি ভেবে দেখেছি? মাফ না করলে আমরা কি ওই লোককে শাস্তি দিতে পারছি? বা এতে করে আমার নিজের কতটুকু উপকার হচ্ছে?

 
ক্ষমা করে দিতে হবে তা যাকে ক্ষমা করা হবে তার জন্য নয় বা তাকে উদারতা দেখানোর জন্য নয়, বরং এটি প্রয়োজন আমাদের নিজেদের জন্য, নিজেদের ভিতরের  ক্ষত, যন্ত্রণাকে প্রশমিত করার জন্য, নিজেকে ভারমুক্ত করার জন্য এবং বাকি জীবন আরো ভালভাবে মানসিক সুস্বাস্থ্য নিয়ে কাটানোর জন্য।

আসুন জেনে নেওয়া যাক ক্ষমা করে দেওয়ার সুন্দর কৌশল গুলো

 
প্রথম কৌশলে আমাদের করতে হবে, একটা কাগজের টুকরা নিয়ে সেখানে অতীতের যেসব ব্যক্তি ও ঘটনা আমাদের আঘাত করেছে, যন্ত্রনা দিয়েছে, কষ্ট দিয়েছে, আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করেছে সেগুলো লিপিবদ্ধ করতে হবে।


দ্বিতীয় ধাপে করতে হবে, শুধু নাম নাম নয় বরং কিভাবে পীড়াদায়ক ঘটনা আমাদের ক্ষত-বিক্ষত করেছে, অপমানিত, লাঞ্ছিত করেছে সেসব লিখতে হবে। ঐ কষ্টের সময়ে আমরা কেমন অনুভব করেছিলাম, কত কষ্ট পেয়েছিলাম তা বিস্তারিত লিখতে হবে। যেমন:  কষ্ট, ক্রোধ, অপমান বোধ, হতাশ বোধ, হৃদয় ভেঙ্গে যাওয়া, প্রতারিত বোধ, বিশ্বাসঘাতকতা, ঘৃণা ও অবহেলা ইত্যাদি সব কষ্টগুলোকে লিখতে হবে।

ক্ষমা করা


তৃতীয় ধাপে করতে হবে, ওই কঠিন কষ্টদায়ক পীড়াদায়ক মানসিকভাবে আঘাত করা ঘটনাগুলো তাড়াহুড়া করে যা মনে আসে সেভাবে লিখার সময় খেয়াল করা কিভাবে আগের বিষন্ন চিন্তাগুলো আবার মনে ফিরে আসছে।

চতুর্থ ধাপে করতে হবে, দুই চোখ বন্ধ করে দুইবার গভীরভাবে নিঃশ্বাস নিতে হবে এবং কয়েক সেকেন্ড রিলাক্স হতে হবে।

পঞ্চম ধাপে, এবার আমরা লিস্টে যা কিছু লিখেছি এবং আমাদের হৃদয়ে গেঁথে থাকা প্রতিটি নাম কল্পনা করে বলতে হবে, ' আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম' । অন্যদিকে যদি আমরা দোষী হয়ে থাকি তাহলে সেটা স্বীকার করে নিতে হবে এবং যাদের আমরা কষ্ট দিয়েছি, তাদের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করতে হবে।

পরবর্তী ধাপে লক্ষ্য করা যায় ক্ষমা বিনিময়ের মাধ্যমে কিভাবে আমরা পুঞ্জিভূত ক্রোধ হিংসা বিদ্বেষ ঘৃণা শত্রুতা অপমান বোধ ইত্যাদি নেতিবাচক গুলো অবমুক্ত হচ্ছে এবং গভীর অনুভব থেকে বা অন্তরের অন্তস্থল থেকে নিজেকে কিরকম ক্ষমতায়িত মনে হচ্ছে।

ক্ষমা করা


শেষ ধাপে আমরা যে কাগজে অভিযোগগুলো লিখেছিলাম সেটার দিকে তাকাতে হবে এবং বড় বড় অক্ষরে লিখতে হবে 'ক্ষমা করে দেওয়া হল' এবং 'আমি নিজে মুক্ত হলাম।'
এই টেকনিক গুলো প্রতিদিন ফলো করে আমরা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারব। এভাবে নিজেদের মম হালকা থাকবে, প্রফুল্ল থাকবে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। 



Post a Comment

0 Comments